আগরতলা: রোমান স্ক্রিপ্টের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তিপ্রামথা ছাত্র সংগঠন (TSF)। রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই অবরোধের কারণে জনজীবন চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। খোয়াই চৌমুহনিসহ একাধিক স্থানে আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়, যার ফলে যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
এই আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষ করে ICSE বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা চরম নাজেহাল অবস্থার সম্মুখীন হয়। অনেক পরীক্ষার্থী যথাসময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি, এবং প্রশাসনের কাছ থেকেও তারা কোনো সহায়তা পাননি। এর ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন অনেক পরীক্ষার্থী।
এদিন বিধানসভা অধিবেশনে যাওয়ার পথে আন্দোলনের মুখে পড়েন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন*। তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রোমান স্ক্রিপ্টের পক্ষে কথা বলেন এবং বিষয়টি বিধানসভায় গুরুত্ব সহকারে উত্থাপনের আশ্বাস দেন।
অন্যদিকে, বিধানসভায় যোগ দিতে গিয়ে একই সমস্যার মুখোমুখি হন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তবে প্রশাসন পুরো পরিস্থিতির সামনে কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারের নীরবতা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন*
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বর্তমান সরকার প্রশাসনকে কার্যত দুর্বল করে দিয়েছে, যার ফলে এমন আন্দোলন নির্বিঘ্নে শহর অচল করে দিতে পারছে। জনগণের প্রশ্ন, কেন পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিল না? কেন প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলো?*
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে আগরতলার সার্কিট হাউস এলাকা। যেখানে অনুমতি থাকুক বা না থাকুক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন সড়ক অবরোধের মাধ্যমে শহর অচল করে দিচ্ছে। ত্রিপুরা হাইকোর্ট, জিবি হাসপাতাল, এমবিবি বিমানবন্দর, আর্ট কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যাওয়ার প্রধান সড়ক VIP রোড বারবার অবরোধের শিকার হচ্ছে।*
সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, প্রশাসন যদি শক্ত পদক্ষেপ নিত, তাহলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হতো। কিন্তু সরকারের দুর্বল নীতির কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
রাজ্যের নাগরিকদের দাবি, এই ধরনের জনজীবন দুর্বিষহ করা আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে।*
অন্যথায়, প্রতিদিনই নতুন আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হবে।