গৌতম আদানির আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণার বিরুদ্ধে, জাতিগত দাঙ্গায় হিংসাদীর্ণ মনিপুর নিয়ে কেন্দ্র সরকারের নীরবতা সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে আগরতলা শহরে রাজভবন অভিযান সংঘটিত করল প্রদেশ কংগ্রেস।বুধবার সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নির্দেশে আগরতলা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয় প্রদেশ কংগ্রেসের সুবিশাল মিছিল। মিছিলটি রাজভবনে উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে সার্কিট হাউজের সামনে পৌঁছানোর পর আরক্ষা প্রশাসনের উদ্যোগে মিছিলটি আটকে দেওয়া হয়। সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা।
পরবর্তী সময়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সেখানে হয় সভা। এইদিনের মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযুষ কান্তি বিশ্বাস, কংগ্রেস নেতা মোহম্মদ বদরুজ্জামান সহ অন্যান্যরা।প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা জানান, গৌতম আদানির আর্থিক দুর্নীতি ও প্রতারণা নিয়ে নিরব কেন্দ্রীয় সরকার। মনিপুর নিয়েও নিরব ভূমিকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একবারের জন্য মনিপুর যান নি প্রধানমন্ত্রী। এই দুই ইস্যুতে উত্তাল হচ্ছে সংসদ। তাই সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নির্দেশে এইদিন রাজ্যপালের নিকট গন ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের রাজ্যপালকে নয়, সব রাজ্যের রাজ্যপাল মারফত এ বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।
দাবি করা হয়েছে সর্বভারতীয় জনমত আগামীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী নীরব ভূমিকা থেকে বের হয়ে এসে মনিপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করার। আরো বলেন মোদী এবং আদানির সাক্ষ্যতার জন্য দেশের মর্যাদা আজ ভূলুণ্ঠিত। অর্থনৈতিক ক্ষেত্র চরম বিপর্যস্ততা নেমে এসেছে। দেশবাসীর চাইছে এর থেকে পরিত্রাণ। তাই কংগ্রেস মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মোদি ও আদানির সাক্ষ্যতার বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করার উদ্যোগ নিয়েছে কংগ্রেস। এদিন রাজভবন অভিযান থেকে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলেন, দেশের মধ্যে সবচেয়ে ধনী হলেন আদানী।
তিনি দেশকে কর ফাঁকি দিয়ে চলছে। তিনি ভারতকে লুটে নিচ্ছে। আর এই আদানির টাকা দিয়ে বিজেপি ভোট লড়াই করছে। অর্থাৎ বিজেপি দেশবাসীকে বলছে আদানি বাঁচাও দেশ বাঁচাও। দেশের বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, কয়লা এবং সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যতগুলি চুক্তি কেন্দ্র সরকার করছে সবগুলি আদানির সঙ্গে করছে।মোদি সরকারের এ ধরনের কার্যকলাপে আজ গোটা দেশবাসী আক্রান্ত। এটা রাজ্যপালের দৃষ্টিতে নেওয়া হলে কোন লাভ হবে না, তা জানতে পেরেও মানুষকে সজাগ করতে কংগ্রেস আজকের এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের ইস্যু টেনে শ্রী বর্মন বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আরো বেশি আক্রান্ত হোক সেটাই চাইছে বিজেপি। বরং বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বাড়াতে চেয়েছে ভারত সরকার। তাহলে ভারতে হিন্দুদের ভোট অটুট থাকবে। তাই যথার্থ ভূমিকা ভারত সরকার থেকে নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন বই-পুস্তক থেকে পর্যন্ত বিজেপি ইতিহাস মুছে ফেলে বিভ্রান্তকর তথ্য আনার চেষ্টা করছে। তাহলে দেশ কিভাবে এগোবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। শ্রীবর্মন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে কংগ্রেসের যোগদান করার বিষয়ে বক্তব্য রেখে বলেন, মানুষ ক্ষমতার জন্য অন্যায়ের পথও অবলম্বন করে। কিন্তু সেই অন্যায় পথ অবলম্বন করতে পারবে না বলেই দল ছেড়েছেন।
শরীরে সততার রক্ত রয়েছে। যতদিন রাজনীতি করবে মানুষের জন্য রাজনৈতিক করবে বলে জানান তিনি। আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত পুলিশের উদ্দির আজ মান-সম্মান নেই। পুলিশের চোখের সামনেই অন্যায় হচ্ছে কিন্তু পুলিশ নিরুপায়। কতদিন এভাবে তারা দায়িত্ব এড়িয়ে চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি।আয়োজিত এ দিনের রাজভবন অভিযানে বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা পীযূষ কান্তি দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।