ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকার পরও বাড়ছে বিদ্যুতের মূল্য। বিদ্যুৎ শুল্ক বৃদ্ধিতে নাজেহাল আমজনতা। ত্রিপুরা রাজ্যে দুই দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের সাধারণ জনগণকে বিদ্যুতের জন্য দিতে হচ্ছে অধিক মূল্য। এতে রাজ্যের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজ্য ত্রিপুরা। কিন্তু, এই রাজ্যের আমজনগণের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত দুর্দশা যেন শেষই হচ্ছে না। রাজ্যের গোমতী ও পালাটানা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখযোগ্য পরিমানে বিদ্যুৎ।
ত্রিপুরা রাজ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী রাজ্য, যেখানে পালাটানা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং নেপ্টা জ্যাকোবাড পাউয়ার প্লান্টের মতো বৃহৎ কেন্দ্র রয়েছে। এই রাজ্যে উৎপাদিত বিদ্যুতের উল্লেখযোগ্য অংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয় এবং আশেপাশের রাজ্যগুলোতে বিক্রি করা হয়। ত্রিপুরা প্রায় 1100 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এর মধ্যে রাজ্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদা প্রায় 300-350 মেগাওয়াট। অতিরিক্ত প্রায় 750-800 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং বাংলাদেশের কাছে রপ্তানি করা হয়।
বহিরাজ্যে বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে ত্রিপুরা সরকার এবং ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড (TSECL) উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব উপার্জন করে। জনগণ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন – আমাদের রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, অথচ আমাদের সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে অধিক মূল্যে। রাজ্যের জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে পারছে না রাজ্য সরকার। ত্রিপুরার মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজ্যে বিদ্যুতের উচ্চমূল্য সাধারণ মানুষের জন্য একটি বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে উৎপাদিত বিদ্যুতের উল্লেখযোগ্য অংশ বহিরাজ্যে বিক্রি করে রাজ্য রাজস্ব বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ গ্রাহকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থতা ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।
সাধারণ জনগণের দাবিগুলি স্পষ্ট—প্রথমে রাজ্যের নিজস্ব চাহিদা পূরণ এবং পরে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি। বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা লাঘব করার জন্য রাজ্য সরকারের উচিত অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা ও কার্যকর নীতি গ্রহণের মাধ্যমে রাজ্য সরকার ত্রিপুরার জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে এবং বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে পারে। এখন দেখার বিষয় হলো, রাজ্য প্রশাসন এ বিষয়ে কীভাবে সাড়া দেয় এবং কবে নাগাদ সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান হয়।