মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপির ‘মহাজুটি’ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। কার্যতই ধূলিসাৎ বিরোধীরা। কিন্তু এমন জয়ের আনন্দের মধ্যেও কিন্তু ‘চাপ’ অনুভব করছে বিজেপির শরিকরা। কেননা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিজেপি একাই এগিয়ে ১২৭ আসনে। আর এই ট্রেন্ড শেষপর্যন্ত বজায় থাকলে কিন্তু শিব সেনার শিণ্ডে শিবির ও এনসিপির অজিত পওয়ার শিবিরকে নানা অঙ্কের মধ্যে পড়তে হবে।এখনও পর্যন্ত শিণ্ডে শিবির এগিয়ে ৫৬ আসনে। অন্যদিকে পওয়ার শিবির ৩৮ আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিচার করে দেখলে তাদের পারফরম্যান্স ভালোই। কিন্তু তবুও তাদের কপালে যে চিন্তার ভাঁজ থাকবেই তা বলা যায়। মনে রাখা ভালো, গতবার বিজেপি পেয়েছিল ১০৫টি আসন।
সরকার গড়ার ‘ম্যাজিক ফিগার’ ১৪৫ ছুঁতে তাদের দরকার ছিল আরও ৪০টি আসন। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন একনাথ শিণ্ডে। তিনি ২০২২ সালে শিব সেনা থেকে বেরিয়ে আসেন ওঁর অনুগামী ৪১ বিধায়কদের নিয়ে। ফলে তাঁকেই দিতে হয় মুখ্যমন্ত্রীর আসন। পরে এনসিপি শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে ‘মহাজুটি’র অংশ হয় অজিত পওয়ার শিবির।এদিন একনাথ শিণ্ডেকে ঘিরে কার্যতই উৎসবের আবহ দেখা যায়। তিনি বলেন, ”আমি মহারাষ্ট্রের ভোটারদের ধন্যবাদ জানাই। এটা বিপুল জয়। আমি আগেই বলেছিলাম মহাজুটি দুরন্ত জয় পাবে। সমাজের সব অংশকে ধন্যবাদ জানাই।
মহাজুটির সমস্ত কর্মীকেও ধন্যবাদ জানাই।” তাঁর শরীরী ভাষায় দেখা গিয়েছে জয়ীর গৌরব।কিন্তু এত আনন্দের মাঝেও অন্য একটি বিষয় শিণ্ডেরা ভালোই বুঝছেন। শনিবার যত সময় গড়িয়েছে, ততই যেন বিজেপির ‘একক’ মহিমা বেড়েছে। যদি সত্যিই ১২৫টি আসন অন্তত তারা পেয়ে যায়, সেক্ষেত্রে যেটুকু আসন বাকি থাকবে সরকার গড়তে তা পেতে হলে অজিত পওয়ার কিংবা একনাথ শিণ্ডে শিবিরের উপরে অতটাও নির্ভর করতে হবে না। এমনকী, চাইলে শিব সেনার উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদেরও পাশে পাওয়ার চেষ্টা করা যায়।
আর এই পরিস্থিতিটা ভালোই বুঝতে পারছে শরিকরা। শিণ্ডে কিংবা অজিত, কারওই তাই মসনদে বসা হবে না। সেখানে ফিরছেন ফড়ণবিসই। এটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এতটা ভালো ফল হয়তো বিজেপিও আশা করেনি। চার মাস আগে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছিল কীভাবে কংগ্রেস, শরদ ও উদ্ধব শিবির এগিয়ে রয়েছে। সেখানে বিধানসভায় আরবসাগরের পাড়ের এই ফলাফল অভাবনীয়। ঝাড়খণ্ডে এখনও তারা পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্র যে বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন দিল তা বলাই বাহুল্য।