জম্মু কাশ্মীরের সিয়াচিন গেলেসিয়া এলাকায় তুষার ধ্বসে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ রাজ্যের বীর সন্তান। শহীদ রাজ্যের বীর সন্তানের নাম শুভঙ্কর ভৌমিক। তাঁর বাড়ি অমরপুরের বীরগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকায়। শুভঙ্কর ইন্ডিয়ান আর্মিতে কর্মরত ছিল। অমরপুরের বীরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার ভৌমিকের ছেলে শুভঙ্কর। সুকুমার ভৌমিকের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সিআরপিএফ-এ কর্মরত। মেঝ ছেলে শুভঙ্কর ইন্ডিয়ান আর্মিতে কর্মরত ছিল।
ছোট ছেলে বাড়িতে থাকে। মঙ্গলবার সকালে শুভঙ্করের ছোট ভাইয়ের মোবাইলে খবর আসে শুভঙ্কর শহীদ হয়েছে। জানা যায় জম্মু কাশ্মীরের সিয়াচিন গেলেসিয়া এলাকায় কর্তব্যরত ছিল শুভঙ্কর।সেই সময় তুষার ধ্বসে গুরুতর ভাবে আহত হয় সে। তার সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। বুধবার সন্ধ্যায় শহীদ শুভঙ্করের কফিন বন্দি দেহ রাজ্যে পৌছায়। এম বিবি বিমান বন্দরে শহীদ শুভঙ্করকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাজ্যপাল ইন্দ্র সেনা রেড্ডি নাল্লু, মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা সহ ইন্ডিয়ান আর্মির আধিকারিকরা। তারপর তার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আর্মি ক্যাম্পে। সেখানে বুধবার রাতে রাখা হয় মৃতদেহ।
বৃহস্পতিবার সাতসকালে আর্মির গাড়িতে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আমরপুরের বীরগঞ্জ গ্রামে শহীদ শুভঙ্করের নিজ বাড়িতে। অমরপুর মহকুমার হাজার হাজার মানুষ থাকছড়া থেকে বাইক রেলি করে শহীদ শুভঙ্করের মৃতদেহ নিয়ে যায় তাঁর নিজ বাড়িতে। শহিদের মৃতদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙ্গে পরে শহীদ শুভঙ্করের স্ত্রী, কন্যা, মা, বাবা সহ পরিবার পরিজনরা। সকলের কান্নায় বীরগঞ্জ গ্রামের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, এলাকার বিধায়ক রঞ্জিত দাস, গোমতী জেলার জেলা শাসক সহ অন্যান্যরা।শহীদ শুভঙ্করের মৃতদেহে জাতীয় পতাকা দিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। শেষ শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, এলাকার বিধায়ক, জেলা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
এইদিন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে শহীদ শুভঙ্করের পরিবারের হাতে চার লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। শহীদ শুভঙ্করের পরিবারের হাতে চার লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়। মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহরায় জানান শহীদ শুভঙ্কর দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। রাজ্যের মানুষ আজীবন সম্মানের সাথে শহীদ শুভঙ্করকে মনে রাখবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই শহীদ পরিবারকে ওনার ত্রান তহবিল থেকে চার লক্ষ টাকা প্রদান করেছেন। এই শহীদ পরিবারের পাশে সরকার রয়েছে। তিনি এইদিন শহীদ শুভঙ্করের আত্মার সদ্গতি কামনা করেন। পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। পরে শহীদ শুভঙ্করের বর্তমান বাড়ি থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর পুরান বাড়িতে।
সেখানে তাঁর মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে টিএসআর, বিএসএফ, আসাম রাইফেল, ত্রিপুরা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলের বুকে দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদ শুভঙ্করকে। তারপর শুরু হয় মৃতদেহ সৎকারের কাজ। দেওয়া হয় গান স্যালুট। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় শহীদ শুভঙ্কর ভৌমিকের। হাজার হাজার মানুষের চোখের জলের মধ্যদিয়ে শেষ বিদায় জানায় দেশের গর্ব রাজ্যের বীর সন্তান শহীদ শুভঙ্কর ভৌমিককে।