গরিব মধ্যবিত্তের রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। বাজারে কাঁচামাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য লাফিয়ে বাড়ার পর এবার আরো একটি আর্থিক চাপ বাড়ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। সেদিন থেকে বেকারির তৈরি খাদ্য সামগ্রী মূল্য প্যাকেট প্রতি ও খাবার প্রতি ৫ টাকা করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বুধবার আগরতলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলন করে ত্রিপুরা বেকারি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই কথা জানান সংগঠনের নেতা কাজল মোদক।তিনি জানিয়েছেন, সব ধরনের পাউরুটি, বিস্কুট, কেক সহ অন্যান্য যে খাদ্য সামগ্রীগুলি রয়েছে সেগুলি ৫ টাকা করে বৃদ্ধি পাবে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি কেক সাত শতাধিক টাকা থেকে ৮ শতাধিক টাকা কিলো হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন আচমকা এক লাফে পাঁচ টাকা মূল্যবৃদ্ধি করার পেছনে মূলত কারণ হলো বেকারির তৈরি খাদ্য সামগ্রী তৈরি করতে যেসব জিনিসের প্রয়োজন সেগুলোর মূল্য গত দু-তিন মাসে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যেমন ডালডা, তেল, ময়দা, চিনি ইত্যাদি সমস্ত জিনিসের দাম বেড়েছে। সেই তুলনায় তাদের আয় বৃদ্ধি পায়নি। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ইন্ডাস্ট্রি নাকি ক্ষতির মুখ দেখছে। এর সাথে জড়িত প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান। যদি ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কর্মচারীদের বড়সড়ো ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। যার কারনে তাদের মূল্য বৃদ্ধির প্রতি হাঁটতে হয়েছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী দুদিন প্রোডাকশন বন্ধ রাখার।মজুদ থাকা দ্রব্য গুলি যাতে দু’দিনের মধ্যে বিক্রি করতে পারে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সম্পাদক মানিক সাহা এবং সহ-সভাপতি বিপ্লব সাহা সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। কিন্তু প্রশ্ন হল গরিব মধ্যবিত্তের জন্য সকাল বেলায় স্বল্প মূল্যে আহারের একমাত্র ব্যবস্থা বেকারির তৈরি কেক, বিস্কুট, পাউরুটি।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের স্টলে দাঁড়িয়ে চা ও বেকারি তৈরির সামগ্রী খেয়ে সারা দিনের জন্য কাজ শুরু করে বহু শ্রমিক। তাদের জন্য বেকারি সামগ্রী এতটা মূল্যবৃদ্ধি নাভিশ্বাস তোলার মতো। সুতরাং এখন আর ১০ টাকায় চা ও বিস্কুট জুটবে না গরিব মানুষের ভাগ্যে। দুবেলা চায়ের খরচ যাবে একবেলায়। কিন্তু সরকার নির্বিকার। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই চলে। জিনিসপত্রের মূল্য এতটা বৃদ্ধি পাওয়ার পরেও গরিব মধ্যবিত্তের মানুষের আয় কিন্তু এক টাকাও বাড়েনি। বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত শ্রমিকদের জন্য সংসার প্রতিপালন করা বড় কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সরকার রাজ্যের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি হয়েছে বলে ঢাক ঢোল বাজিয়ে চলেছে।
কিন্তু কোথায় সেই আয়, সেটা মানুষের নজরে আসছে না। এক কথায় মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়ার পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন টু শব্দ নেই সরকারের। সরকারি যদি ভূমিকা থাকতো তাহলে এক ধাপে ৫ টাকা করে বেকারি সামগ্রী বৃদ্ধি করার সুযোগ দিত না। দুই টাকা করে বৃদ্ধি করার সুযোগ দিত। কিন্তু গরিব মধ্যবিত্তের জন্য একধাপে পাঁচ টাকা বৃদ্ধি মানে অনেকটাই মূল্যবৃদ্ধি বলে মনে করছে সচেতন মহল।