রাজধানীর বর্ডার গোল চক্কর এলাকা দিয়ে বাইপাস রোড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর জন্য শুরু হয়েছে শতাধিক পরিবারকে উচ্ছেদ করার তোড়জোড়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার দুপুরের নাগাদ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হয় স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ এখন তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। দীর্ঘ ৬০ থেকে ৭০ বছর ধরে এই খাস জমিতে বসবাস করে আসছে তারা। গত কয়েকদিন আগে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় জমি ছাড়ার জন্য। এর বাবদ তাদের সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু দেখা গেছে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে শুক্রবার জমির দাবিতে ময়দানে নেমেছে তারা।
তাদের বক্তব্য, সরকার যে আর্থিক সহযোগিতা করছে তা দিয়ে তাদের ছিটেফোঁটাও হবে না। এবং তাদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা নেই যে জমি ক্রয় করার জন্য। তাদের মধ্যে কেউ কেউ টমটম চালক, আবার কেউ দিনমজুর এবং কেউ গৃহ পরিচারিকার কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন। সুতরাং তাদের ভাড়া থাকারও আর্থিক সামর্থ্য নেই। এ বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়ক, কাউন্সিলর এবং জেলা শাসক থেকে শুরু করে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার পক্ষ তাদের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এখন বুল ড্রজার এলাকায় ভাঙচুর শুরু হয়ে গেছে। চলছে উচ্ছেদ, মাথা গোজার জায়গা নেই তাদের। তাই তারা রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছে।সরকারের উদ্দেশ্যে দাবি তাদের বসবাসের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দিতে হবে। কারণ সরকার লাইট হাউজ নিয়ে তাদের সাথে কথার খেলাপ করেছে। লাইট হাউসের শিলান্যাস হওয়ার আগে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা করে দিতে পারলে তাদের লাইট হাউজে থাকার সুযোগ মিলবে।
পরবর্তী সময় তাদের ঘুমে রেখে ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকায় বড়লোক মানুষের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে সরকার। এ ধরনের প্রতিশ্রুতির খেলাপ করার পেছনে মূলত কারণ কি জানতে তা চাইলেন ভিটেমাটি হারা মানুষ। তারা সরকারের বিরুদ্ধে আরো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারাও ভোট দিয়েছিল। তাহলে এখন কেন এভাবে গরিবকে মারছে? বাজারে দ্রব্যমূল্য আঁকা ছোঁয়া, বিভিন্ন কাজ করে সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন ভিটে মাটি হারালে তাদের খোলা আকাশের নিচে থাকা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। এমনটাই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। তারা আরো দাবি করেন এ সরকার গরিবদের মানুষ বলে মনে করে না। যার কারণে এ ধরনের কার্যকলাপ সংঘটিত করে চলেছে বলে অভিযোগ তুলেন। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় পুলিশ এবং টিএসআর। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।