রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা গোটা রাজ্যবাসীর প্রতি সুস্থ সংস্কৃতি’কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান করেছিলেন, প্রশাসনিকভাবে অপ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নজরে পড়েছে।
তবে শুধুমাত্র কিছু কামাইবাজ, ধান্দাবাজ পুলিশকর্মী এবং আধিকারিকদের জন্য কিভাবে সরকারের মুখ লজ্জায় ঢাকা পড়ছে তা রীতিমতো দৃষ্টান্ত হিসেবে উঠে এসেছে রাজ্যের এই মুহূর্তের সবথেকে বিতর্কিত মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে, এক্ষেত্রে অবশ্য নাটের গুরু তেলিয়ামুড়া থানার সর্বজান্তা পন্ডিত গুরু গম্ভীর ভাবের অধিকারী তেলিয়ামুড়া থানার ওসি রাজীব দেবনাথ।
জীবনের শেষ বয়সে এসে রাজীব বাবু এখন রোমান্সে মত্ত হয়ে পড়েছেন। আর রোমান্স করার জন্য বেছে নিচ্ছেন নিজের থানা চত্বরকেই, রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় কিছু মহিলা সহকর্মী কনস্টেবলদের মাঝে দাঁড়িয়ে একের পর এক গানের তালে তালে কোমর দোলাচ্ছেন এবং রাজীব বাবু কিভাবে নিজেকে তরুন হিসেবে প্রমাণিত করছেন তা থানাতে কান পাতলেই রীতিমতো হট টপিকস্।
তা করতেই পারেন, বয়স শেষের দিকে থাকলেও নিজের ক্ষমতাকে ব্যাবহার করে সহকর্মী মহিলা কনস্টেবলদের সাথে হয়তো নাচতে পারেন বলেই নাচছেন, আপত্তি নেই, শুধুমাত্র যেই বয়সে রাজীব বাবুর সুস্থ সংস্কৃতির কথা চিন্তা করা উচিত, সেই বয়সে যেভাবে পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে অনুকরণ করছেন তার জন্য উনাকে বাহবা দিতেই হয়।
কিন্তু তাই বলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গ্রামীণ এলাকার মধ্যেই উশৃংখলতার পরিস্থিতি আমদানি করবেন, সাধারণ মানুষ বারবার ফোন যুগে অভিযোগ করলে ভূমিকা গ্রহণ করবেন না এবং শেষমেষ বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও নিজের সেলফোন নিয়ে ব্যাস্ত থাকবেন, এই ছবি কিন্তু তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশের , যা কিনা একেবারেই বেমানান।
ঘটনা হচ্ছে কালীপূজা’কে সামনে রেখে কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নয়নপুরের চামপ্লাই চরের মাঠে স্থানীয় পূজা উদ্যোক্তারা সুপারস্টার নামে একাংশ উদ্যাম যুবক যুবতীদের প্রায় নগ্নতার প্রদর্শন করছিল রবিবার রাতে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে গোটা আয়োজন’কে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য স্থানীয় এলাকা থেকে শুরু করে জারুইলংবাড়ি এবং আশপাশের কিছু কিছু মাতব্বর যারা বিভিন্নভাবে জুয়ার ব্যাবসাকে আকড়ে ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন তারা নাকি মাঠে নেমেছেন, খবর এমনটাই।
বিষয়টা হচ্ছে এমন, পুলিশ’কে মোটা অঙ্কের দক্ষিণা প্রদান করে কালী পূজার আবহে সুস্থ সংস্কৃতিকে জলাঞ্জলি দিয়ে তেলিয়ামুড়া থানার অন্তর্গত কৃষ্ণপুর বিধানসভায় একদিকে জুয়া, আরেক দিকে উন্মত্ততা তথা নগ্নতার প্রদর্শন রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
এলাকার একটা অংশের পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ প্রশ্ন করছেন রাজীব বাবুর মতো পুলিশরা যদি এভাবে বিভিন্ন এলাকার সুস্থ সংস্কৃতি’কে নষ্ট করার জন্য শুধুমাত্র কটা টাকার কাছে নিজেদের বিবেক আর বুদ্ধি তথা দায়বদ্ধতাকে বিসর্জন দেয় তাহলে সমাজ কোন দিকে যাবে?
যদিও যেভাবে নিজের চেয়ারের ক্ষমতা জাহির করতে গিয়ে তেলিয়ামুড়া থানার বর্তমান ওসি সাহেব গোটা তেলিয়ামুড়া থানা এলাকা’কে রকমারি অপরাধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে চলেছেন তার নিরিখে কিন্তু সরকারের মুখ পুড়ছে।
এদিকে এভাবে প্রকাশ্যে জুয়া, নগ্নতার প্রদর্শন এবং পুলিশ কর্তার সঙ্গে মহিলা কনস্টেবলের উন্মত্ত নৃত্য প্রদর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনে কোন বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কিনা, তাই কিন্তু এখন দেখার বিষয়।