ঘটনাপ্রসঙ্গে কাছাড়ের পুলিশপ্রধান নুমাল মাহাত্তা জানান, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ‘যুক্তিসঙ্গত বলপ্রয়োগ’ করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতী সমাবেশের ভিড়ে ঢুকে পড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে।’’ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে এ বার উত্তপ্ত হয়ে উঠল অসমের শিলচর। দিকে দিকে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের একাংশ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়েন। শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তাবাহিনীও তৎপর।সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার সকালে শিলচরের একটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে শান্তিপূর্ণই ছিল। কিন্তু বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
সমাবেশ থেকেই ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবি ওঠে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তীব্রতর হতে থাকে স্লোগানও। তবে আচমকাই সমাবেশ থেকে কয়েক জন বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে। উত্তপ্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশও। তার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে চামড়াগুদাম, বেরেঙ্গা এবং শিলচরের পুরাতন লক্ষ্মীপুর রোড এলাকা।ঘটনাপ্রসঙ্গে কাছাড়ের পুলিশপ্রধান নুমাল মাহাত্তা জানান, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ‘যুক্তিসঙ্গত বলপ্রয়োগ’ করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতী সমাবেশের ভিড়ে ঢুকে পড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে। তবে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’এই অশান্তির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিক্ষোভকারীদের একাংশই।
এক বিক্ষোভকারী জানান, তাঁরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু কিছু লোক সেখানে অশান্তি করার চেষ্টা করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনার নিন্দা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আইনটির (ওয়াকফ সংশোধনী আইন) বিরোধিতা করছি, কারণ এটি ইসলামবিরোধী। তবে আমরা কখনওই সহিংস আন্দোলনের পক্ষে নই।’’উল্লেখ্য, শনিবারই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছিলেন, তাঁর রাজ্যে ওয়াকফ নিয়ে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তাঁর দাবি ছিল, “প্রায় ৪০% মুসলিম জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও, অসমে কেবলমাত্র তিনটি স্থানে শান্তিপূর্ণ ও বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ ছাড়া কোনও অশান্তিই হয়নি।
শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য রাজ্যের পুলিশবাহিনী এবং বাসিন্দাদের প্রশংসা ও ধন্যবাদ প্রাপ্য। অসমের মানুষ জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায় ও ধর্ম নির্বিশেষে আত্মিক দিক থেকে ঐক্যবদ্ধ, আনন্দ ও সম্প্রীতির সঙ্গে বহাগ বিহুকে স্বাগত জানাতে তৈরি।’’ শুধু অসম নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ চলছে। পশ্চিমবঙ্গ, মণিপুরেও বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকে। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ এবং তৎপরবর্তী অশান্তিতে এখনও থমথমে মুর্শিদাবাদ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে শনিবার রাত থেকে জেলার বেশ কিছু এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাতভর তারা সুতি, শমসেরগঞ্জ থানা এলাকায় টহল দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরেছে পুলিশও।