ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তারকাটা বেড়া ডিঙিয়ে অনুপ্রবেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কর্তব্য নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। বিলোনিয়া মহকুমার আমজাদ নগর, মতাই, ঋষ্যমুখ,রাজনগর, রাঙ্গামুড়া, রাধানগর সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে দেদার অনুপ্রবেশ ঘটছে এবং পাচার বাণিজ্য চলছে। কিন্তু শীতঘুমে রয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। গতকাল সন্ধ্যা রাতে বিলোনিয়া শহর সংলগ্ন আমজাদ নগর এলাকা দিয়ে তারকাটা ডিঙিয়ে ৭ জন বাংলাদেশী একসাথে ভারতে প্রবেশ করে। গোপন খবরের ভিত্তিতে বিলোনিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আইপিএস রিষভের নেতৃত্বে এবং বিলোনিয়া থানার ওসি শিবু রঞ্জন দে এর প্রচেষ্টায় বিলোনিয়া থানার পুলিশ মনুরমুখ তবলা চৌমুহনি এলাকার নাকা চেকিং পয়েন্টে TR 08 A 4224 নম্বরের একটি সাদা ইকো মারুতি গাড়িকে থামিয়ে চেকিং শুরু করলে সাত জন বাংলাদেশী একসাথে উদ্ধার হয়। সাথে সাথে গাড়ির চালক রাজু বিশ্বাস সহ সাতজন বাংলাদেশীকে বিলোনিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
সাতজনই স্বীকার করে তাদের বাড়ি বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তারা আমজাদ নগর তার কাটার সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। ভারতের দিক থেকে একজন টাকার বিনিময় তাদেরকে এদেশে আসতে সাহায্য করে এবং গাড়িটি ভাড়া করে তাদেরকে আগরতলা পাঠিয়ে দিতে সহযোগিতা করে। তারা আরো জানায় বাংলাদেশে তারা নিরপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাই তারা তাদের প্রাণ বাঁচাতে তারা ভারতবর্ষে আত্মগোপন করতে চাইছে কিছুদিনের জন্য। তারা সকলেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সদস্য।তারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন মুসলিম হয়েও তারা বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। বর্তমানে বাংলাদেশে শান্তি নেই।
চারিদিকে অশান্তি, খুন ডাকাতি, রাহাজানি, লুট্ত রাজ দিনকে দিন বেড়েই চলছে। আরেকটি সূত্র থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে এরা ইসলামিক জামাতি এর দল এবং সন্ত্রাসবাদীদের সাথে সরাসরি যোগাসাজোস রয়েছে। এদেশে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য তারা অবৈধভাবে ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছে। বর্তমানে রাজ্যে ওয়াকফ ইস্যু নিয়ে যে চরম অশান্তি ও নৈরাজ্য চলছে তাতে সহযোগিতা করার জন্য তারা এ রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। বিভিন্ন জায়গা দিয়ে এই ধরনের অনেক ইসলামিক সংগঠনের লোকজন প্রবেশ করেছে রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য। যাইহোক অবৈধ অনুপ্রবেশ একটি দেশের নিরাপত্তার প্রতি যেমন প্রশ্নচিহ্ন ছুঁড়ে দেয় ঠিক তেমনি নিরাপত্তা নিয়ে উঠে প্রশ্ন।
এখন সবচাইতে বড় প্রশ্ন হল আমজাদনগর এলাকাকে ঘিরে আমজাদ নগর, সাড়াসীমা এবং বিলোনিয়া তিনটি বিওপি থাকার ফলেও কিভাবে তারা তারকাটা ডিঙিয়ে অনুপ্রবেশ করতে পারে। বিলোনিয়া থানার পুলিশ এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ৭ বাংলাদেশী নাগরিক রবিন হোসেন (২৯), মোহাম্মদ রফি (২৫), আমজাদ হোসেন(২৭), শহীদুর জ্জামান(২৮), ফযজল(২৪),রেহান মোল্লা (২১),এবং গিয়াস উদ্দিন(৩৫) এর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 61(2)/143(3)/এবং IPP ACTএ মামলা গ্রহণ করে যার কেস নাম্বার বিলোনিয়া P.S-27/25। আজ তাদের বিলোনিয়া আদালতে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে সৌপার্দ্য করা হয়।
এই বিষয়ে বিলোনিয়া থানার ওসি শিবু রঞ্জন দের জানান তাদের কাছ থেকে ৭ টি এন্ড্রয়েড মোবাইল, একটি কিপ্যাড মোবাইল, ভারতীয় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৮০ টাকা এবং বাংলাদেশী এক লক্ষ ১হাজার ৯৩৫ টাকা উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান তারা কেন বাংলাদেশে থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে এসেছে এবং তাদের আসতে কারা কারা সহযোগিতা করেছে কারা এর সাথে জড়িত রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যাইহোক একসাথে এতগুলি বাংলাদেশ আটক হওয়ায় বিলোনিয়া শহর জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।