উত্তর জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করতে বুধবার বিকেলে ধর্মনগর আসলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা। বহিরাগত এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ধর্মনগর স্টেশনে নেমে বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের লালছড়া এলাকায় নবনির্মিত ডিস্ট্রিক্ট পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারের উদ্বোধনী মঞ্চে চলে যান। সেখানে প্রথমে নতুন ভবনের উদ্বোধন করে চলে যান মূল মঞ্চে। মঞ্চে মূখ্যমন্ত্রীকে উষ্ণ সংবর্ধনা প্রদান করা হয় বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে। মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ তথা ধর্মনগরের বিধায়ক বিশ্ববন্ধু সেন, ত্রিপুরা সরকারের যুব বিষয়ক ক্রীড়া দপ্তর ও সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, এলাকার বিধায়ক যাদব লাল নাথসহ জেলাশাসক চন্দ্রানী চন্দ্রান, পুলিশ সুপার অবিনাশ রাই, সভাধিপতি অপর্ণা নাথ সহ আরো অন্যান্য সরকারী আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ষাটটি ব্লকের মধ্যে কদমতলা ও কালাছড়া ব্লক প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বন্টনে প্রথম ও দ্বিতীয় হওয়ায় দুই ব্লকের আধিকারিক দ্বয়কে সংবর্ধনা প্রদান করেন। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুরস্কৃত করা হয়। এর পর মূখ্যমন্ত্রী উনার পঁয়তাল্লিশ মিনিটের বক্তব্যে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। ভার্চুয়ালি উদ্বোধনে উত্তর জেলার বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ের পাকা ভবন নির্মাণ,গ্রামীণ রাস্তাঘাট পাকা করণ সহ স্বাস্থ্য দপ্তরে উন্নয়নের মুকুট জুড়ে দেন পালক। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন বিরোধীরা উন্নয়নের ছোঁয়া দেখতে পারেনি।
সহ সদ্য সমাপ্ত হওয়া ত্রিপুরা বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে বিরোধী সিপিআইএম ও কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।আর উন্নয়নের কথা বললেই বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর কথাকে নিয়ে কটাক্ষ করতে থাকে, বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরা জাতীয় স্তরে বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। আর এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথেই এগোচ্ছে রাজ্য। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী উনার নামে বিভিন্ন যোজনা ইতিমধ্যে চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বালিকা যোজনা ও সম্পূর্ণ মানসিক ভারসাম্যহীনদের ভাতা বৃদ্ধি। তাছাড়া বিভিন্ন জনকল্যাণ মুখী সিদ্ধান্ত নিয়ে সদ্য সমাপ্ত হওয়া ত্রিপুরা বাজেট অধিবেশনে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, যা আগামী দিনে ত্রিপুরা বাসীর চলার পথকে আরো সম্মৃদ্ধি করবে।
তাছাড়া মৎস্য চাষে রাজ্যকে আরো নয় কোটি টাকা প্রদানের বাজেট বাড়ানো হয়েছে। অটল জল দ্বারা মিশন যেখানে রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বে মাত্র তিন শতাংশ ছিল সেটা বর্তমানে বিরাশি শতাংশে পরিণত হয়েছে। এতে ছড়ার ও বৃষ্টির জলকে কাজে লাগিয়ে বিশুদ্ধ পানীয় জল তৈরি করে মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া সতেরো হাজারেরও অধিক সরকারি চাকরি প্রদান করা হয়েছে বিগত দিনে। এভাবে মুখ্যমন্ত্রী উনার দীর্ঘ ভাষণে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন ও আগামী দিনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থিত জনগণের সম্মুখে।এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই অনুষ্ঠানে আগত শত শত মানুষদের ঠান্ডা পানীয় জল ও শরবত বিতরণ করেন জেলার যুব মোর্চার নেতৃত্ব ও কর্মীরা। এক্ষেত্রে “জল পানাহারে হোক শীতল রোধ” এই কাজে এগিয়ে আসলেন সমস্ত যুব মোর্চার কর্মীরা।