আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, তারা কিছু চিনা পণ্যের উপরে আরও ৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপাচ্ছে। সব মিলিয়ে চিনা পণ্যে বসছে ১০৪ শতাংশ শুল্ক।ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া শুল্কনীতির মোকাবিলা করতে ভারত এবং চিনের আরও কাছাকাছি আসা উচিত। সঙ্কটে হাতে হাত মিলিয়ে দুই দেশের উচিত একে অপরের পাশে দাঁড়ানো! এমনই মনে করেন ভারতের চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং।ইউ জিং তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পোস্টে ভারত এবং চিনের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই সম্পর্কই সব বাধা কাটিয়ে উঠতে পারবে।
অর্থাৎ, আমেরিকার শুল্কনীতির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। তাঁর কথায়, ‘‘দুই বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশের (ভারত এবং চিন) উচিত সমস্যা (ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক) কাটিয়ে ওঠার জন্য এক সঙ্গে দাঁড়ানো।’’ ইউ জিঙের দাবি, চিনের অর্থনীতি এমন একটি ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যা বিশ্ববাণিজ্যে স্থিতিশীল বৃদ্ধিকেও সুনিশ্চিত করে। ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র মনে করেন, মার্কিন শুল্কের মুখে পড়ে দেশগুলি তাদের উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। বাণিজ্য বা শুল্কযুদ্ধে কেউ কখনও জয়ী হতে পারে না। সমস্ত দেশের উচিত বহুপাক্ষিকতাকে প্রাধান্য দেওয়া এবং একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা।
মঙ্গলবার ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, তারা কিছু চিনা পণ্যের উপরে আরও ৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক চাপাচ্ছে। সব মিলিয়ে চিনা পণ্যে বসছে ১০৪ শতাংশ শুল্ক, যা কার্যকর হবে বুধবার থেকেই। এই ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই দুই দেশের সম্পর্কের উত্তাপ আরও বেড়েছে। জবাবে চিনও জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়বে! সেই আবহেই ইউ জিঙের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে পাশে চাইছে চিন।অতীতেও ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নয়াদিল্লিকে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল বেজিং।
চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মতে, গত বছর রাশিয়ায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের পর থেকে ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি হয়েছে। ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে।’’ অর্থাৎ দুই দেশ এক হলে আখেরে লাভ দু’জনেরই। চিন প্রশাসনের প্রস্তাব নিয়ে যদিও এখনও পর্যন্ত মোদী সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।