রাজধানীর খয়েরপুর স্থিত চৌদ্দ দেবতা মন্দিরের সীমানায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলতে গিয়ে শরিক নেতার কাছেই মুখ পুড়লো সরকার প্রধানের। সোমবার চৌদ্দ দেবতা মন্দির প্রাঙ্গনে তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের পৌরহিত্যে বৈঠক হয়। প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মনের বক্তব্য, তিনি গত কয়েকদিন আগে জানতে পারেন রাজ্যের অন্যতম ঐতিহ্য চৌদ্দ দেবতা মন্দিরের সীমানায় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।
তারপর তিনি বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সোমবার তিনি সরজমিনে পরিদর্শন করতে যান। সেখানে গিয়ে অভিযোগের সততা পান। তিনি বলেন দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ, মন্দিরের জায়গা দখল করে বেআইনিভাবে কাজকর্ম চলছে। গত কয়েকদিন আগে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মন্দিরের পেছনে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অথচ এ বিষয়ে রাজ পরিবারকে কেউ কোন কিছু জানার নি।
তারপর তিনি খবর পেয়ে এসে বিষয়টি নিয়ে আজ বৈঠক করেছেন স্থানীয় বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে সহ সমাজপতিদের সাথে। তিনি বলেন, এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র হবে তার বিরোধিতা তিনি করছেন না। জনগণের স্বার্থে সরকার উন্নয়নমূলক কাজকর্ম অবশ্যই করুক।কিন্তু সরকারের প্রয়োজন যেহেতু মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর থাকাকালীন সময়ে চৌদ্দ দেবতা বাড়ি মন্দিরের নামে দান করে গেছেন তাই মন্দির চত্বরে কোনরকম কাজকর্ম করতে গেলে অবশ্যই জানিয়ে করা দরকার। নয়তো ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে।
প্রতিবছর এই মন্দিরে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ আসে। এই মন্দির মানুষের আস্থা, আবেগ এবং ঐতিহ্য। তাই মন্দিরের সীমানার ভেতর কোন কিছু না করাই ভালো। তিনি আরো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যদি আগামী দিন এ ধরনের আরও কোনরকম কার্যকলাপ সামনে আসে তাহলে ভুল সংশোধন করে দিতে সামনে এসে দাঁড়াবে। এটা ১৯৭৫ কিংবা ৮০ সাল নয়। তিনি আরো জানিয়েছেন কুড়ি দিন পর পুনরায় বৈঠক হবে। এদিকে এলাকার বিধায়ক রতন চক্রবর্তী শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে বলেন এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র হলে সবার উপকারে আসবে। এতবড় এলাকায় কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই।
তাই মন্দিরের পেছনে স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের ধারণা হয়েছিল মন্দিরের সীমানায় হচ্ছে। অথচ মন্দিরের সীমানায় হচ্ছে না। প্রদ্যুৎ কিশোর দেব বর্মন এসেছেন মন্দির থেকে যাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দূরে হয় তার জন্য। তাই যে পরিকল্পনা নিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এর পরিকল্পনা পরিবর্তন করা হবে। আরো কিছুটা জমি এগিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। এখন দেখার বিষয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেটা কতটা সমাধান হয়।