ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে চলছে আর্থিক দুর্নীতি। এই দুর্নীতির প্রভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের এমবিবিএস এর ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিয়ে পরবর্তী সময়ে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় পাস করানোর কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের প্রফেসর সোমা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ।গত দুই বছরে কোটি টাকার উপর ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের Physiology বিভাগের HOD প্রফেসর সোমা চৌধুরী।
অভিযোগ- পয়সার বিনিময়ে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় পাশ করানো এবং অনেক ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের ইউনিভার্সিটি পরীক্ষায় ( এমবিবিএসের ফাইনাল পরীক্ষা) ফেল করিয়ে পরবর্তী সময়ে সাপ্লিমেন্টরি পরীক্ষায় পাশ করানোর কথা বলে ছাত্রছাত্রীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। গত বছর প্রায় ১৮ থেকে ২২ জন ছাত্রছাত্রী থেকে টাকা নেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রী প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগেও এরকম ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
এবছর প্রায় ১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। এভাবে অনেক ছাত্রছাত্রীকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেল করিয়ে পরবর্তী সময় টাকা নেওয়ার অভিযোগ । ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ শুরুতে সব জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই মাসের শুরুতে কলেজ থেকে স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চে একটি FIR করা হয়। গত সপ্তাহে এই প্রফেসর কলেজ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে খবর। এই প্রফেসর এর স্বামী, দীপেন চৌধুরী ত্রিপুরা ইউনিভার্সিটিতে Physiology বিভাগে প্রফেসর এবং উনার কন্ট্রোলারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তাই যেকোনোভাবেই ছাত্রছাত্রীদের পাশ করানো যাবে বলে ছাত্রছাত্রীদের বলতেন এবং টাকা নিতেন।
লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ছাত্রছাত্রীরা যখন এমবিবিএস ভর্তি হন। তখন তাদের পরিবারের একটাই লক্ষ্য থাকে তাদের ছেলেমেয়েরা এমবিবিএস সম্পন্ন করে ডাক্তার হবে ।কিন্তু এই ধরনের প্রফেসরদের অর্থের লোভে ওই ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে চলছে ।তাছাড়া তাদের পিতা-মাতারা অনেক কষ্ট করে টাকা যোগাড় করে তাদেরকে এই বিভাগে ভর্তি করায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আবারও অর্থের যোগান দিতে তাদের হিমশিম খেতে হয় ।
এই ধরনের প্রফেসরদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর মত প্রকাশ অভিজ্ঞ মহলের।এই ঘটনার সঙ্গে কলেজের অন্যান্য কর্মকর্তারাও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে ।তাছাড়া কলেজের অন্যান্য বিভাগেও এরকম রেকেট তৈরি করে অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা থাকার সন্দেহ রয়েছে ।এখন দেখার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে প্রশাসনিক ভাবে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।