উত্তর-পূর্বের রাজ্য গুলোতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে নাবার্ড এবং রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার গাইড লাইন গুলো পর্যালোচনা করার জন্য ব্যাংক গুলোকে পরামর্শ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার রাজধানীর পোলো টাওয়ারে আয়োজিত ব্যাঙ্কার্স কনক্লেভে বক্তব্য রেখে এই কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।তিনি বলেন, আগামী দিন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতবর্ষ রপ্তানির গেটওয়ে হতে চলেছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের কিছু অংশ ভারতে এবং ভারতের কিছু অংশ বাংলাদেশে চলে যাওয়ায় উত্তর পূর্বাঞ্চলে ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নত করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
তারপর স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পর বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধন করে বাংলাদেশ এবং ভারতের ছিটমহল পরিবর্তনের কাজ করেছে। যার কারণে আজ ভারতের জলপথ চিটাগাং বন্দরের সাথে জুড়ে গেছে। এবং চিটাগাং বন্দর দিয়ে রপ্তানি করার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আজ উত্তরপূর্বাঞ্চল কোন কিছু তৈরি করলে চিটাগাং বন্দর দ্বারা বিশ্বের বাজারে রপ্তানির জন্য খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে উত্তর পূর্বাঞ্চলের শান্তি ফিরে এসেছে। একই সাথে স্বনির্ভর হচ্ছে মানুষ। বিশ্বের সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কানেক্টিভিটি জুড়ে যাওয়ার কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে।
আরো বলেন, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৬৫ বার এসেছেন।৭০০ -এর উত্তর পূর্বাঞ্চল সফর করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। আর এটি বলে দেয় ভারত সরকারের ফোকাস কি। শাহ বলেন বিগত ১০ বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রধানমন্ত্রী এই ১০ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সমগ্র বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বিকাশের রাস্তায় নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। ১০ বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামোগত দিক থেকে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার কাজ করা হয়েছে বিগত ১০ বছরে। ২০ টির অধিক মৌ স্বাক্ষর করে ৯ হাজারের অধিক উগ্রবাদীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যখনই কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখনই উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতির সুরক্ষার জন্য প্রচেষ্টার কোন খামতি রাখেন নি প্রধানমন্ত্রী। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার এখন আর কোন সমস্যা নেই। কেন্দ্রীয় সরকার সকল বিনিয়োগকারিদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলিতে বিনিয়োগ করার জন্য অনুপ্রানিত করছে।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য মাধবরাও সিন্ধিয়া বক্তব্য রেখে বলেন, ১০ বছর পূর্বে বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষের অর্থনীতি ছিল ১১ তম স্থানে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্র নেতৃত্বে ১০ বছরে বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষের অর্থনীতি পঞ্চম স্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। আগামী দুই বছরে ভারতবর্ষ জাপান ও জার্মানিকে ছাপিয়ে যাবে।
ভারতবর্ষের অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় স্থানে গিয়ে দাঁড়াবে। তিনি আরও বলেন দেশের মানব সম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে ডোনার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের ডিজিটাল পরিকাঠামোর আরো উন্নয়ন এবং লক্ষ্য মাত্রার মধ্য দিয়ে ব্যাংক গুলিকে তাদের প্রচার কাজ করার প্রয়াস চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন ভবিষ্যতের জন্য এই সামিট উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে একটি নতুন মোড় নিয়ে আসবে।
ব্যাঙ্কার্স কনক্লেভে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বহু প্রকল্প লাগু রয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ব্যাংকিং পরিষেবা চালু রয়েছে। প্রতিটি জেলায় এটিএম রয়েছে। ত্রিপুরা স্টেট লেভেল ব্যাংকার্স কমিটি ২০২১-২২ অর্থ বছরে অটল পেনশন যোজনা প্রকল্পের অধিন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। সকল ব্যাঙ্ক ও মাইক্রো ফাইনান্স প্রতিষ্ঠান মুদ্রা লোণ প্রদান করছে। আয়োজিত অনুষ্ঠানে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ব্যাংকের আধিকারিক।