দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কৈলাশহরের জলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের ছয় নং ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত বলেহর গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না অ্যাম্বুলেন্স সহ কোন গাড়ি। গ্রামের রাস্তাটি বড় করার জন্য গ্রামবাসীরা দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে গিয়ে জানানোর পরও এখন পর্যন্ত গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি বড় হয়নি। উপরন্তু রাস্তার পাশের মনু নদীর জলে দিনের পর দিন রাস্তাটির প্রশস্ত কমছে। যার ফলে গোটা গ্রামের মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা যায়, গ্রামে প্রায় তিনশো পরিবারের বসবাস রয়েছে। বলেহর গ্রামের নব্বই শতাংশ মানুষই কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল।
গ্রামের জন্মলগ্ন থেকেই তিনশো পরিবারের চলাচলের জন্য গ্রামে কেবলমাত্র তিন ফুট প্রসস্থ একটি রাস্তাই রয়েছে। এই তিন ফুট রাস্তা দিয়ে গ্রামে ছোট বড় কোনো ধরনের গাড়িই ঢুকতে পারে না। গ্রামে গাড়ি ঢুকতে না পারায় গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাক সব্জি সরাসরি বাজারে এনে বিক্রি করতে পারে না বলে অভিযোগ। যার ফলে গ্রামের কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গ্রামের একমাত্র তিন ফুট প্রসস্থ রাস্তাটির পাশে মনু নদী রয়েছে। মনু নদীর ভাঙ্গনের ফলে গ্রামের রাস্তাটি মনু নদীর জলে তলিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে মন্ত্রী টিংকু রায় বলেহর গ্রামে মনু নদীর ভাঙ্গন পরিদর্শন করতে যাবার পর গ্রামবাসীরা রাস্তাটির প্রশস্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন।
গ্রামবাসীদের কথা শোনার পর মন্ত্রী সেইসময় কথাও দিয়েছিলেন রাস্তাটি বড় করার জন্য তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।সেই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক মন্ত্রী টিংকু রায় স্থানীয় পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাস্তাটি বড় করার জন্য কার্যকরী ভুমিকা নেওয়ার জন্য। পূর্ত দপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই দপ্তরের আধিকারিকরা কয়েকবার গ্রামে গিয়ে রাস্তার জরিপ করে ডি.পি.আর তৈরি করে ফেলেছেন। রবিবার মন্ত্রী টিংকু রায় পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ফের গ্রামে গিয়ে রাস্তাটি পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সাথে ছিলেন পূর্ত দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ রঞ্জন দাস, জলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পরিতোষ দে, উপ প্রধান বিনেন্দ্র মাহিস্য দাস, পূর্ত দপ্তরের অপর দুই আধিকারিক প্রনব দাস, দেবপ্রিয় সিনহা সহ আরও অন্যান্যরা। মন্ত্রী গ্রামে গিয়ে প্রথমে গ্রামবাসীদের সাথে বৈঠক করেন। তাদের সমস্যার কথা শোনেন মন্ত্রী। তারপর মন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, রাস্তাটির এত বেহাল দশা যে বাইক কিংবা এম্বুলেন্স নিয়ে রাস্তাটি দিয়ে বাজারে যাওয়া যায় না। অবাক করার বিষয় প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা গ্রামবাসীকে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। রাস্তাটি বড় করার কাজ শুরু করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সংশ্লিষ্ট পূর্ত দপ্তরের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে। তবে রাস্তাটি সঠিকভাবে নির্মাণ করতে গেলে সাত থেকে ৮ কোটি টাকার প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী টিংকু রায়।