কৈলাশহরের পুরাতন ডাকবাংলো থেকে রাংগাউটি অব্দি রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এরফলে প্রতিদিন এই রাস্তায় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যান চালক সহ এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে কয়েকবার স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পরও রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হয়নি। এরফলে গ্রামবাসী সহ যান চালকরা একপ্রকার বাধ্য হয়ে কুড়ি নভেম্বর সকাল সাড়ে দশটা থেকে কুবঝার এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেছে। রাস্তা অবরোধের ফলে কয়েকশো নিত্য যাত্রী সহ স্কুল ছাত্র ছাত্রীরা আটকে পড়েছে। এবং অবরোধের দুই দিকে কয়েকশো গাড়িও আটকে পড়েছে। অবরোধস্থলে কৈলাসহর থানার বিশাল পুলিশ এবং টি.এস.আর বাহিনী মজুত রয়েছে। অবরোধকারীরা গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে অবরোধ স্থলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। অবরোধ স্থলে প্রচন্ড উত্তেজনা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, কৈলাসহর শহরের পুরাতন ডাকবাংলো থেকে রাংগাউটি অব্দি এই রাস্তাটি শহর উত্তরাঞ্চল এলাকার মানুষের শহরে আসার একমাত্র রাস্তা। তেরোটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য ছিলো। এই রাস্তা সংস্কারের জন্য দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের পর অবশেষে বিগত ২০২১সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় কাগজে পত্রে এই রাস্তার কাজ শুরু হলেও মূলত ২০২২সালের শেষদিকে রাস্তার কাজ শুরু হয়ে ২০২৩সালের মাঝামাঝি সময়ে এই রাস্তার কাজ সমাপ্ত হয়েছিলো। অবরোধকারীদের অভিযোগ, রাস্তার কাজ করার সময় থেকেই একেবারে চূড়ান্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছিলো। এমনকি সবার অজান্তে নির্মানকারী সংস্থা রাতের অন্ধকারে ঠান্ডা বিটুমিন দিয়ে এই রাস্তাটি নির্মান করেছিলো। যারফলে কাজ সমাপ্ত হবার একবছরের মধ্যেই রাস্তাটি ভেংগে যায় এবং চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। প্রতিদিন এই রাস্তার উপর ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এমনকি অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, রাস্তার অবস্থাটা এতটাই খারাপ যে, গর্ভবতী মহিলাদের গাড়ি দিয়ে এই রাস্তার উপর দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় গাড়ির মধ্যেই প্রসব করে ফেলছেন বলে অবরোধকারীরা জানান। এতকিছুর পরও প্রশাসন উদাসীন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হেলদোল নেই। অবরোধকারীরা প্রশাসনের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আরও বলেন যে, গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসক কিংবা জেলাশাসক কিংবা পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের কয়েকবার লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পাশাপাশি ডেপুটেশন দিয়ে জানানোর পরও আজ অব্দি কোনো ধরনের ভুমিকা নেয়নি প্রশাসন। গ্রামবাসীদের চাপে পড়ে চলতি বছরের দূর্গা পুজার এক সপ্তাহ পূর্বে দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে রাস্তার প্রকৃত অবস্থা পরিদর্শন করেছিলেন। পরিদর্শন চলাকালীন সেইসময় গ্রামবাসীরা আধিকারিকদের ঘেরাও করে জানতে চেয়েছিলেন কবে থেকে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে। সেইসময় আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন দূর্গা পুজার পরেই রাস্তার কাজ শুরু হবে। এই আশ্বাস পাবার পর সেইসময় আধিকারিকরা ঘেরাও মুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু দূর্গা পুজার পর লক্ষ্মী পুজা এবং কালী পুজাও সমাপ্ত হয়ে গেলেও রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। তাই গ্রামবাসীরা বাধ্য হয়ে কুড়ি নভেম্বর বুধবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেছেন। যতক্ষন অব্দি প্রশাসনের বড় ধরনের আধিকারিকরা অবরোধস্থলে এসে রাস্তার কাজ কবে থেকে শুরু হবে এই ঘোষণা দেবেন না, ততোক্ষণ অব্দি অবরোধ চালিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানান অবরোধকারীরা। এও না হলে প্রয়োজনে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে বলেও অবরোধকারীরা জানিয়েছেন