রাজ্যে গত কয়েকমাস ধরে একটা অস্থিরতা চলছে। কোথাও কোথাও দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে, কোথাও জাতি জনজাতির মধ্যে বিভেদ তৈরি করে ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। ৬ ও ৭ অক্টোবর কদমতলায় এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান সরকারের জন বিরোধী কার্যকলাপের কারনে ঘটনা গুলি ঘটেছে। শাসক দল ক্রমশ জন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। সেই জন বিচ্ছিন্নতাকে আড়াল করার জন্য এই ধরনের ঘটনা সংগঠিত করা হচ্ছে। শনিবার সিপিআইএম রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী।তিনি আরও বলেন জন বিক্ষোভ যেন প্রকাশ্যে না আসে, তার জন্য জনগণকে বিভাজন করে রাখার চেষ্টা চলছে।
কদমতলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশকিছু দিন ধরে গোটা উত্তর জেলার আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। গণ্ডাছড়া ও কৈত্রাবাড়ির ঘটনার পর দেখা গেছে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের একালায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি। আগে এমনটা করা হতো না। বর্তমান সরকারের সময় এমনটা করা হচ্ছে। কদমতলার ঘটনার সময়ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয় নি। ঘটনার অনেক দিন পর রাজনৈতিক দলের নেতাদের ঐ এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। তারপর সিপিআইএম দলের নেতৃত্বরা এলাকা পরিদর্শন করে। কদমতলার ঘটনায় যে সকল পরিবার গুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই পরিবার গুলি যেন পুনঃরায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে তার জন্য সিপিআইএম-এর প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে। এইদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান জিতেন্দ্র চৌধুরী।
জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান মুখ্যমন্ত্রী এইদিন জানতে চেয়েছিলেন কদমতলার ঘটনার পিছনে কি কারন থাকতে পারে। সেই বিষয়ে সিপিআইএম প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরে।একজন মন্ত্রীর নাম মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়েছে। সেই মন্ত্রী লাগাতার সাম্প্রদায়িক পোস্ট দিয়ে গেছেন সামাজিক মাধ্যমে। কদমতলার ঘটনার জন্য এইদিন অভিযোগের কাঠ গড়ায় তোলা হয় তৎকালীন উত্তর জেলার পুলিশ সুপারকে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর বর্ডার গোলচক্কর থেকে জয়পুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় সড়ক প্রশস্ত করার জন্য। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন অভিযোগ তুলে তাদের যে পরিমাণ ক্ষতি পূরণ প্রদান করা হয়েছে তা অত্যন্ত কম। তাই তারা সড়ক অবরোধে সামিল হয়।
জিতেন্দ্র চৌধুরী আরো বলেন সরকার যে ভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে এইটা মোটেও গ্রহণ যোগ্য নয়। যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে তারা ৬০ থেকে ৭০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। তাদের কারো কারো যুত জায়গা নাও থাকতে পড়ে। কেউ কেউ খাস জায়গায় বসবাস করছে। কিন্তু তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো ঠিক নয়। তিনি সরকারের নিকট দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলিকে মাথা গুজার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। এইদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে এবং কুর্তি-কদমতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ইসলাম উদ্দিন।