চিনি বোঝাই মারুতি ভ্যানের ধাক্কায় অবশেষে মৃত্যু হলো যুবক রামপ্রসাদ দেবের। দুইদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার সকাল আটটায় রাজধানীর জিবিপি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শুক্রবার রাত আনুমানিক নয়টা ত্রিশ মিনিট নাগাদ কলমচৌড়া থানা সংলগ্ন রাস্তার পাশের আম গাছের নিচে হালকা বাতাসে আম কুড়াতে গেলে যুবক রামপ্রসাদ দেবকে বক্সনগর বাজার থেকে দ্রুত গতিতে আসা TR08C 0261 নম্বরের একটি চিনি বোঝাই মারুতি ভ্যান সজোড়ে ধাক্কা মারলে, পাশেই ছিটকে পড়ে যুবক এবং প্রচন্ডভাবে রক্তাক্ত ও জখম হয়।পরবর্তীতে রবিবার সকালে জিবি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।এদিকে যুবকের মৃতদেহ বক্সনগরে পৌঁছতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকাবাসী।
তারা কলমচৌড়া থানার সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় এবং থানা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও চরম ভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পাশাপাশি চিনি ব্যবসা প্রসঙ্গে থানা প্রশাসনের প্রতি আঙুল তোলে অভিযোগ করে বলে, প্রশাসন প্রতি বস্তা চিনি থেকে পঞ্চাশ টাকা করে রেখে অবৈধ চিনি ব্যবসাকে সম্পূর্ন অঁবাধ করে দিয়েছে।যার ফলে রাতে পাচার কারীরা কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে তুফান গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকে।এতে সামনে মানুষ থাকলেও পিষে ফেলতে কৃপনতা করে না।গত পনেরো দিনে এমন ভাবে চিনির গাড়ির চাঁপায় বড়সড় ভাবে তিনটি দুর্ঘটনা হলেও ছোট খাটো দুর্ঘটনাতো হয়েই চলছে।সীমান্তেও মৃত্যু হয়েছে একাধিক যুবকের।এদিকে যুবকের মৃত্যুতে আন্দোলন কারীরা জানায়,থানা প্রশাসন পাচার কারীদের সাথে গোপন সখ্যতা রেখে তাদেরকে ফায়দা দিয়ে চলছে।তবে চিনির এমন রমরমায় গোটা বিষয়ে স্থানীয় থানা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে মদত থাকায় রবিবার যেন তারই বহিপ্রকাশ ঘটতে দেখা গেল।কলমচৌড়া থানার ইতিহাসেই নয়,হয়তো রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথমবার থানায় ওসি’র কোয়ার্টারে আন্দোলন কারীরা প্রবেশ করে হামলার চেষ্টা করে।যদিও কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় উঠে যায় প্রমিলা বাহিনীর পিছনে অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা দৌড়ে গিয়ে কোনো রকমে মান বাঁচান ওসি প্রশান্ত কুমার দে’র।থানা সূত্রে খবর,ওসি সাহেব তার কোয়ার্টারে থাকলেও আন্দোলন কারীরা এই খবর জানতেন না।
কিন্তু তিনি যে সেখানে আছেন, কোনো এক মাধ্যমে সেই খবর জানতে পারায় আন্দোলন কারীরা সেখানে ছুটে যান এবং তাকে হামলার চেষ্টা করেন।সব মিলিয়ে অতীতের সমস্ত রকমের সুনামকে জলান্জলি দিয়ে এক কলন্কজনক ইতিহাস রচিত হলো কলমচৌড়া থানায়। এদিকে ঘটনার ধামাচাপা দিতে বেলা প্রায় চারটায় কলমচৌড়া থানায় ছুটে আসেন বিশালগয় মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পান্নালাল সেন।তিনি সেখানে পৌঁছে আন্দোলন কারীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদেরকে বিভিন্ন উপায়ে শান্তনা দেওয়া সহ তাদের অভিযোগ নোট করে সেগুলো উর্ধ্বতন মহলে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিলে দীর্ঘ চার ঘন্টা পর আন্দোলন কারীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।